আউটসোর্সিং কী
ব্যবসা ক্ষেত্রে বহিঃউৎসায়ন বা আউটসোর্সিং (ইংরেজি: Outsourcing) বলতে এমন এক ধরনের ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকে বোঝায়, যার মাধ্যমে কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার কোনও কাজ (পণ্য বা পণ্যের অংশবিশেষ উৎপাদন বা সেবা) চুক্তির মাধ্যমে বাইরের দ্বিতীয় কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করিয়ে নেয়। অর্থাৎ বহিঃস্থ কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পণ্য বা সেবার যোগান দেয়।
ইংরেজি "আউটসোর্সিং" শব্দটি সম্ভবত মার্কিন ইংরেজি শব্দগুচ্ছ "Outside Resourcing"-এর সংক্ষিপ্ত রূপ এবং এটি আমাদেরকে কমপক্ষে আশির দশকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। আউটসোর্সিং বলতে কখনো কখনো এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মী হস্তান্তর করাকেও বুঝায়, কিন্তু সব সময় না। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সরকারি কাজ সমুহকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিদেশি এবং দেশি ঠিকাদারি উভয় আউটসোর্সিং এর অন্তর্গত, এবং কখনো আউটসোর্সিং, এ দূরবর্তী দেশে নিজের প্রতিষ্ঠান স্থাপন (সমুদ্রবর্তী) অথবা পাশাপাশি কোন দেশে প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও অন্তর্ভুক্ত থাকে। অনেক মানুষ আউটসোর্সিং এবং দূরবর্তী দেশে প্রতিষ্ঠান স্থাপন কে গুলিয়ে ফেলেন – তবে তারা ভিন্ন। একটি কোম্পানি আউটসোর্স করতে পারে (একজন আউটসোর্সিং সেবাদান কারী) দূরবর্তী দেশের কোন সাহায্য ছাড়াই. উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালে, Procter and Gamble কোম্পানি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কর্মীদের আউটসোর্স করে। কিন্তু এতে তারা দূরবর্তী কোন দেশের সাথে সম্পৃক্ত হননি। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। কারণ এতে স্থানীয় শ্রমিকদের চাইতে কম বেতন প্রদান করতে হয়। এটি আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে একটি বড় অনুপ্রেরণা।
কিছু জনপ্রিয় অনলাইনে ইনকাম করার উপায় গুলো হলোঃ ফ্রিল্যান্সিং, ব্লগিং, ইউটিউব, এফিলিয়েট মার্কেটিং ও ই-কমার্স হচ্ছে বর্তমানে অনলাইন ইনকাম এর বেশ জনপ্রিয় এবং অনেক কার্যকরী পদ্ধতি। আমার যদি আপনারও লেখালেখি করার বেশিক আগ্রহ থাকে বা লেখা লেখির শখ থাকে, তাহলে ব্লগিং করে আপনি খুব সহজেই অনলাইনে ইনকাম করতে পারেন।
বাংলাদেশের অবস্থান ফ্রী-ল্যান্সিং
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং শব্দ দুটি এ দেশে অনেকের কাছেই পরিচিত। দেশের প্রচুর ওয়েবসাইট ডেভেলপার, গ্রাফিকস ডিজাইনার, রাইটার, মার্কেটার বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন, আবার অনেকে নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে মার্কেটে প্রবেশ করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে বিশ্বে আউটসোর্সিং তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে। এখানে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচ লাখ কাজ করেন মাসিক আয়ের ভিত্তিতে।
অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
ব্লগিং (Blogging) করে আয় ব্লগিং অনলাইন আয়ের বেশ পুরাতন কিন্তু অনেক কার্যকরী একটা পদ্ধতি। ... লেখালেখি যদি আপনার আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজেই এখান থেকে ইনকাম করতে পারেন। আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ, জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা বেশি সে বিষয়ে ব্লগিং করলে তা সবথেকে বেশি কাজে দেয়।
আউটসোর্সিং এর গুরুত্ব
মানে আপনি কোন কাজ বাইরের মানুষকে দিয়ে করিয়ে নিতে চাচ্ছেন সেটা সময় বাঁচানোর জন্যে, কম খরচের করার জন্যে, অথবা অস্থায়ী কাজের জন্যে স্থায়ী কাউকে নিয়োগ না করার জন্যে, যেকোন কারণে হতে পারে।
আউটসোর্সিং এর ওয়েবসাইট গুলো
https://www.fiverr.com/ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এখানে অনেক ধরণের কাজ পাওয়া যায়। আউটসোসিং এর আনেকগুলো ওয়েবসাইড আছে তার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হল http://www.upwork.com এটাই সবচেয়ে ভাল হবে বলে আমি মনে করি।
কীভাবে আউটসোর্সিং করা হয়
প্রযুক্তির মাধ্যমে নানা ধরনের কাজের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে কাজের সুযোগ। এর বড় একটি উদাহরণ হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিং। এতে নির্দিষ্ট অফিসে বসে কাজের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানগুলো বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে কাজের দায়িত্ব দিয়ে দেয়। বিশ্বজুড়ে আউটসোর্সিং খাতের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০১৮ সালে আউটসোর্সিং শিল্পের আকার ৮ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
আউটসোর্সিং কত প্রকার
আউটসোর্সিং দ্বারা ইনকাম করাটা আজকাল অনেক সাধারণ একটি ব্যাপার। এমনিতে, professional outsourcing এবং project based outsourcing এই দুই প্রকার আপনার কাজে আসবে। কারণ, দুটি ক্ষেত্রেই আপনি ঘরে বসে দূরবর্তী অবস্থান থেকে (remotely) ইন্টারনেটের সাহায্যে কাজ করতে পারবেন।
আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশ
আউটসোর্সিং তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্তভাবে কাজ করে আয় করার পেশা। আর একটু সহজ ভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকে আউটসোর্সিং বলে।
ভবিষ্যতে এ খাতের আরও প্রবৃদ্ধি হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এ খাতে নানা পরিবর্তন প্রয়োজন হবে। ২০১৯ সালের আউটসোর্সিং দুনিয়ায় পাঁচটি খাতে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে। এসব খাতের পরিবর্তনগুলো জেনে নিন:
ডেটা সিকিউরিটি
আউটসোর্সিং খাতে সবচেয়ে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা দেবে তথ্য সুরক্ষা বা ডেটা সিকিউরিটি খাতে। কারণ, মানুষ এখন নানা রকম স্মার্ট পণ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে। এসব স্মার্ট পণ্য নানা রকম তথ্য বা ডেটা তৈরি করছে। তাই প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের মাথায় ডেটা সিকিউরিটির বিষয়টি এখন সবার আগে আসবে। বিশেষ করে ইন্টারনেট অব থিংসের (আইওটি) ব্যবহার বাড়লে এর ওপর আক্রমণও বাড়বে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এইচপির সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ শতাংশ আইওটি পণ্যে মারাত্মক নিরাপত্তা ত্রুটি রয়েছে। সিকিউরিটি আউটসোর্সিং কোম্পানিগুলো তাই এ খাতে গুরুত্ব দেবে। এ খাতে আউটসোর্সিং করার ব্যাপক সুযোগ তৈরি হবে। যাঁরা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করবেন, তাঁরা এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ব্যাপক আয় করতে পারবেন।
বিশেষ আউটসোর্সিং
আউটসোর্সিং খাতে যেকোনো বিষয়ে বিশেষত্ব থাকতে হবে। কারণ, একাধিক আউটসোর্সিং সেবাদাতাকে ব্যবস্থাপনা করাটাও অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে, মাঝারি ও ছোট আকারের কোম্পানির জন্য। তারা কম খরচে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পুরো কাজ চায়। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আলাদা আলাদা দায়িত্ব দিলে তাদের ব্যবস্থাপনাসহ কাজে দেরি হতে পারে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানগুলো সেন্ট্রালাইজড সিস্টেম বা যেখান থেকে সব সেবা পাওয়া যাবে, সেদিকেই ঝুঁকবে। অর্থাৎ, বিশেষ কাজের উপযোগী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের চাহিদা বাড়বে এ বছরে।
ক্লাউড টেকনোলজি
এখন অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ক্লাউড প্রযুক্তির দিকে যাচ্ছে। ২০১৯ সাল জুড়ে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসাগুলোর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ এখন অনলাইনে তথ্য রাখা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার। আইডিসির হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের মোট ব্যয়ের অর্ধেকই হবে পাবলিক ও প্রাইভেট ক্লাউডের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে। তাই ক্লাউড প্রযুক্তিতে আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রবৃদ্ধি দেখা যাবে। এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ভালো করার সুযোগ থাকবে।
সামাজিক দায়বদ্ধতা
যেসব প্রতিষ্ঠান সামাজিকভাবে দায়বদ্ধতা দেখায়, তাদের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। বাজারে পণ্য ও সেবা আনার ক্ষেত্রে তাই পরিবর্তনের বিষয়টি চোখে পড়ছে। ‘সোশ্যালি রেসপনসিবল আউটসোর্সিং’ বা (এসআরও) সুবিধা বাড়তে দেখা যাবে। এর অধীনে আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা কর্মীরা কাজ পান। বর্তমান বিশ্বে ২ লাখ ৪০ হাজার কর্মী এর আওতায় পড়েন। আগামী এক দশকে এ ধরনের আউটসোর্সিং কাজের সুবিধা বাড়বে।
রোবোটিকস
তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ায় দ্রুত পরিবর্তন আসবে। আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসের যুগ। আউটসোর্সিং বিশেষজ্ঞরা তাঁদের পোর্টফোলিওতে বিষয়টি যুক্ত করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ অটোমেশনের কারণে ৮০ কোটি চাকরি বন্ধ হবে। একই ধরনের কাজ বারবার করা, যেমন: খাবার প্রক্রিয়াজাত, গাড়ি চালানোর মতো বিষয়গুলো বেশি ঝুঁকিতে পড়বে। অনেক প্রতিষ্ঠান অটোমেশনের দিকে যাবে। এ ক্ষেত্রে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের পছন্দের বিষয়টি বেছে নেওয়ার আরও সুযোগ দেবে।