দৈনিক শিক্ষা খবর, শিক্ষকের বেতন না বাড়িয়ে শিক্ষা মান বৃদ্ধি করা যাবে শিক্ষামন্ত্রী...
সদ্য প্রকাশিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে যা দাঁড়ায় তা হলো, পাসের হার অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি এবং জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেকে বেড়েছে। গত এক বছরে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা না বাড়লেও আসনের কোনো কমতি নেই। বরং বিষয়টি এমন যে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ আসন বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খালি থাকার সম্ভাবনা। ধারণা করা হচ্ছে, সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে না। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য জনা যায়।এমপিওভুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন।
সারা দেশ থেকে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকেরা গাজীপুরের বোর্ড বাজারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকেরা জানান, বেসরকারি কলেজগুলোয় বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত সারা দেশের সাড়ে পাঁচ হাজার অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষককে জনবলে অন্তর্ভুক্তি না থাকার অজুহাতে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে সরকারি সুযোগ-সুবিধার বা এমপিওভুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ কলেজ কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয় না। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার অজুহাতে প্রদত্ত নামমাত্র বেতনও বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষকদের জীবন-জীবিকা চালানো কঠিন হয়ে গেছে। অন্যদিকে, একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকেরা ক্যাডার, নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের জনবলে না থাকার পরও এমপিওভুক্ত হয়েছে। মাস্টার্সের সমমান বা কামিল শ্রেণির শিক্ষকেরাও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকেরা অন্তর্ভুক্ত হতে পারছেন না।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে পেশাগত দাবি আদায়ের জন্য অনেক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার পরও আমরা সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের মাধ্যমে শিক্ষা সেক্টরে অনেক বৈষম্য কমেছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত সারা দেশের মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষক এখনো এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছেন।’
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত ও কর্মরত সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে প্রতি মাসে ১২ কোটি বা বছরে ১৪৪ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ হলেই আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয় এবং জনবল ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষক ও ওই সংগঠনের সহসভাপতি মেহেদী হাসান, হেলাল উদ্দিন, ময়মনসিংহ এলাকার শিক্ষক ও সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, নাজমুল হক, নওগাঁ এলাকার আহসানুল হক প্রমুখ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মশিউর রহমান বলেন, অনার্স-মাস্টার্সে শিক্ষকেরা যখন চাকরিতে যোগ দেন, তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমোতাবেক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেই চাকরিতে যোগদান করেছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, ওই শিক্ষকদের বেতন–ভাতা প্রদান করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা এমপিওভুক্তি হবেন না। যদি কোনো কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের চাকরির বিধিমোতাবেক বেতন প্রদান না করে, তবে তাঁদের লিখিত অভিযোগ পেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।