নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ Lows of Bangladesh 2022

নারী নির্যাতন আইন


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

সাংবিধানিকভাবে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং নারীশিক্ষা ও তাদের ক্ষমতায়নে  বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরন্তর প্রচেষ্টা, সময়োপযোগী ও সাহসী সিদ্ধান্তের কারণেই সর্বক্ষেত্রে আজ নারীর জয়জয়কার। স্বাধীনতার ৫১ বছরে অর্থনীতির সব সূচকে, মানবিক ও সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর সাফল্যের পেছনে নারীদের ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরণীয়।

এ কারণেই দুবছরের শিশু থেকে বৃদ্ধ নারী— সবাই শিকার হচ্ছে সহিংসতার। কিছু মানুষরূপী দানবের মানসিকতার বিকৃতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মর্গে থাকা নারীর লাশও রেহাই পাচ্ছে না ধর্ষকের কবল থেকে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি এবং নারীশিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেও আইনের ফাঁক গলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের বিয়ে দেয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক সম্পন্ন করার আগেই শিক্ষাঙ্গন থেকে ঝরে পড়ছে তারা।

নির্যাতনের শিকার হলেও ‘আইন’ না জানায় প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে পারছে না বেশিরভাগ নারী। এমনকি পৈতৃক সম্পত্তিতেও পাচ্ছে না তাদের ন্যায্য অধিকার। এজন্য সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ ও সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

অথচ নারী শিশু নির্যাতন, বাল্যবিয়ে, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে রয়েছে আইন। অনেক সময় জনসচেতনতার অভাবে, আবার কখনো কখনো লোকলজ্জার ভয়ে, কখনো অর্থাভাবে, কখনো প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় আইনি প্রতিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দেখা দেয়। আবার কখনো আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা না থাকায় বিচার প্রাপ্তিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আইন করার পর ‘রিভিউ’ বা ‘প্রিভিউ’ করার ক্ষেত্রে অস্পষ্টতা, আইন সম্পর্কে ধারণার অভাবে নারীর অধিকারপ্রাপ্তি হচ্ছে না।  বিশেষ করে রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা কর্মস্থলে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে বিধিমালা থাকলেও অনেকে এসব আইনের সুফল পাচ্ছেন না। প্রয়োজনের তাগিদে এসব আইন তৈরি করা হলেও ব্যবহারের অভাবে সেসব কার্যত ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’র মতো অবস্থা।

নারি বিদ্বেষ 

নারী বিদ্বেষ (ইংরেজিMisogyny) হল মহিলা বা নারীর প্রতি ঘৃণা বা তীব্র বিরাগ। এর থেকেই জন্ম নেয় যৌন নিপীড়নের মত বিকৃত মানসিকতা। অর্থাৎ কোনো নারী পুরুষটির নির্বাচনে সহমত পোষণ করলে তিনি যথাযোগ্য সম্মানের অধিকারিণী অন্যথায় সেই নারীই চরম অপমান ও অসম্মান ও শাস্তির যোগ্য প্রাপক। নারীবিদ্বেষ সমাজে তৈরি করে যৌন বৈষম্য, শত্রুতা, পুরুষ আধিপত্যবাদী ধারণা, মর্যাদাহানি, সহিংসতা, এবং নারীর আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে তাকে ভোগ করার বাসনা।

স্ত্রী-বিদ্বেষের প্রমাণ ইতিহাস ঘাঁটলেও পাওয়া যায়। প্রাচীন গ্রীক ইতিহাসে নারীবিদ্বেষকে একটি অসুখ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রাচ্যের কিছু প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থ এবং পাশ্চাত্যের কিছু দর্শনের গ্রন্থেও এই নারীবিদ্বেষের উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে।

বিভিন্ন পুরাণ সংক্রান্ত প্রাচীন গ্রন্থের মধ্যে পাওয়া যায়। এছাড়াও উল্লেখ যে কিছু প্রভাবশালী পশ্চিমী দার্শনিক ও চিন্তাবিদ গনের এ সম্পর্কে কথিত মতবাদ পাওয়া যায়। নারীবিদ্বেষের বিপরীত মতবাদ হচ্ছে পুরুষবিদ্বেষ নারীর প্রতি সহিংসতা বা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে সহিংস অপরাধগুলো যেগুলো প্রধাণত বা কেবলই নারী বা বালিকাদের উপরেই করা হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই ঘৃণাপূর্বক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়,[১] যা নারী বা বালিকাদের উপর করা হয় কেননা তারা নারী। নারীর প্রতি সহিংসতার খুব লম্বা ইতিহাস রয়েছে, যদিও এরকম সহিংসতার মাত্রা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছিল, এমনকি আজও বিভিন্ন সমাজে এগুলোর মাত্রা ও ঘটনার ধরন বিভিন্ন হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই নারীকে সমাজে বা আন্তঃব্যক্তি সম্পর্কে অধীনস্থ করার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি তার অধিকারপ্রাপ্তির বোধ, উচ্চস্থানের বোধ, নারীবিদ্বেষ, বা নিজের সহিংস প্রকৃতির জন্য নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করতে পারেন।

জাতিসংঘের ডেকলারেশন অন দ্য ডেকলারেশন অফ ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন থেকে বলা হয়, "সহিংসতা হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে নারী ও পুরুষের মধ্যকার ঐতিহাসিক অসম ক্ষমতা সম্পর্কের প্রকাশ" এবং "নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে প্রধান সামাজিক কৌশলগুলোর মধ্যে একটি যার দ্বারা নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় অধীনস্থ অবস্থানে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।"[২]

জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনান ২০০৬ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ফর উইমেন (UNIFEM)-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছিলেন:

নারী ও বালিকাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি পৃথিবীব্যাপি বিরাজমান সমস্যা। সমগ্র বিশ্বজুড়ে তিন জন নারীর অন্তত একজনকে মারা হয়েছে, জোরপূর্বক যৌনক্রিয়া করতে বাধ্য করা হয়েছে, বা অন্য কোনভাবে তার জীবনে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে যেখানে নির্যাতনকারী কোনভাবে তার পরিচিত ছিল।[৩]

নারীর প্রতি সহিংসতাকে কয়েকটি বৃহৎ শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে "ব্যক্তির" দ্বারা সহিংসতা ও "রাষ্ট্রের" দ্বারা সহিংসতা উভয়ই রয়েছে।। সহিংসতার কোন কোন ধরন আছে যা ব্যক্তির দ্বারা ঘটে যথা - ধর্ষণ, গৃহ নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রজননগত জোর-জবরদস্তি, কণ্যা শিশুহত্যা, লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত, প্রসবকালীন সহিংসতা, উচ্ছৃঙ্খলা জনতার দ্বারা সহিংসতা বা দাঙ্গা, রীতি বা আচারগত চর্চা যেমন সম্মান রক্ষার্থে হত্যা বা অনর কিলিং, যৌতুক সহিংসতা বা পণ মৃত্যু, নারী খৎনা, অপহরণপূর্বক বিবাহ বা জোরপূর্বক বিবাহ। আবার কিছু কিছু ধরনের সহিংসতার কর্তা হচ্ছে রাষ্ট্র, যেমন - যুদ্ধকালীন যৌন সহিংসতা, সংঘর্ষের সময় যৌন সহিংসতা এবং যৌন দাসত্ব, বাধ্যতামূলক নির্বীজন, জোরপূর্বক গর্ভপাত, পুলিশ ও কর্তৃত্বকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দ্বারা সহিংসতা, পাথর ছুড়ে হত্যা বা চাবুক মারা। আবার অনেক ধরনের যৌন সহিংসতা সংঘটিত সংগঠিত অপরাধ চক্রের দ্বারা, যেমন - নারী পাচার এবং জোরপূর্বক বেশ্যাবৃত্তি।[৪]

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে নারীর জন্ম থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সকল পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন ধরন নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে।[৫]

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নতুন ধারা তৈরি হয়েছে যেখানে বিভিন্ন সম্মেলন বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন ডিরেক্টিভ এর সাহায্যে আন্তর্জাতিক মাত্রায় এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাচ্ছে, যেমন যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ডিরেক্টিভ, মানব পাচারের বিরুদ্ধে ডিরেক্টিভ।[৬][৭] উল্লেখ্য, এখানে ডিরেক্টিভ বলতে কোন আন্তর্জাতিক সংঘের একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি করা লক্ষ্যমাত্রাকে বোঝানো হয় যেখানে সংঘটির সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে সেই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে কাজ করতে হয়, কিন্তু সেই লক্ষ্যপূরণের উপায় সেখানে বলে দেয়া থাকে না।

নারি নির্যাতন মামলা, মিথ্যে অভিযোগ

বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের প্রচুর মিথ্যা মামলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশে পুলিশ বলছে নারী নির্যাতনের মামলার আশি শতাংশরই কোন প্রমাণ মেলেনা।

পুলিশের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক সহেলী ফেরদৌস বলছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় জামিন পাওয়া সহজ নয় বলে অনেকে এর অপব্যবহার করছেন।বাংলাদেশে নারী নির্যাতনের প্রচুর মিথ্যা মামলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

তিনি বলছেন, "যারা ফ্যব্রিকেটেড মামলা দেন তাদের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটা বড় সুবিধা হল যে এই আইনে জামিন পেতে বেগ পেতে হয়। আগে আইনটি জামিন অযোগ্য ছিল।এখন কিছু ক্ষেত্রে জামিন পাওয়া যায়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনেক ক্ষেত্রে আসামিকে জেলে থাকতে হয় না হয় অনেকে পালিয়ে থাকে। জামিন কঠিন হওয়ায় অনেকে এটি অপব্যবহার করেন। খুব দ্রুততম সময় এই মামলায় হয়রানি করার একটা সুযোগ রয়েছে।

তিনি আরো বলছেন, "এর মামলা খুব দ্রুত গতিতে সম্পন্ন করতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যে। এ জন্য মামলার সংখ্যা বেড়ে যায়। মামলা করার পর প্রতিপক্ষ যে একটা চাপে থাকে, হেনস্তা হয় সে কারণে যাদের সাথে বিবাদ তারা হয়ত আপোষ করে ফেলে।"

সহেলী ফেরদৌস বলছেন, বাংলাদেশে জমিজমা সংক্রান্ত মামলাই সবচাইতে বেশি হয়ে থাকে। 

জমিজমার মামলা সময় সাপেক্ষ হয়। প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবেও অনেক সময় নারী নির্যাতনের মামলা জুড়ে দেয়া হচ্ছে, বলছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশে পুলিশের দেয়া হিসেবে ২০১৭ সালে দেশব্যাপী ১৫ হাজারের কিছু বেশি নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে।

যারমধ্যে প্রায় চার হাজার মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ তদন্তে ঘটনার কোন প্রমাণ পায়নি বলে মামলা বিচার পর্যন্ত গড়ায়নি।

অথবা ঘটনা মিটমাট হয়ে গেছে বলে মামলা তুলে নেয়া হয়েছে।

পুলিশ বলছে প্রচুর মামলা রয়েছে যাতে পরিবারের একজন দোষী হলেও পুরো পরিবারকে জড়ানো হয়েছে।


নারীর প্রতি সহিংসতা বা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে সহিংস অপরাধগুলো যেগুলো প্রধাণত বা কেবলই নারী বা বালিকাদের উপরেই করা হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই ঘৃণাপূর্বক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা নারী বা বালিকাদের উপর করা হয় কেননা তারা নারী। নারীর প্রতি সহিংসতার খুব লম্বা ইতিহাস রয়েছে, যদিও এরকম সহিংসতার মাত্রা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ছিল, এমনকি আজও বিভিন্ন সমাজে এগুলোর মাত্রা ও ঘটনার ধরন বিভিন্ন হয়। এরকম সহিংসতাকে প্রায়ই নারীকে সমাজে বা আন্তঃব্যক্তি সম্পর্কে অধীনস্থ করার কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তি তার অধিকারপ্রাপ্তির বোধ, উচ্চস্থানের বোধ, নারীবিদ্বেষ, বা নিজের সহিংস প্রকৃতির জন্য নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করতে পারেন।


জাতিসংঘের ডেকলারেশন অন দ্য ডেকলারেশন অফ ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইমেন থেকে বলা হয়, "সহিংসতা হচ্ছে নারীর বিরুদ্ধে নারী ও পুরুষের মধ্যকার ঐতিহাসিক অসম ক্ষমতা সম্পর্কের প্রকাশ" এবং "নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা হচ্ছে প্রধান সামাজিক কৌশলগুলোর মধ্যে একটি যার দ্বারা নারীদেরকে পুরুষের তুলনায় অধীনস্থ অবস্থানে জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়।"

জাতিসংঘের প্রাক্তন মহাসচিব কফি আনান ২০০৬ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ফর উইমেন (UNIFEM)-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ঘোষণা করেছিলেন:

নারী ও বালিকাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি পৃথিবীব্যাপি বিরাজমান সমস্যা। সমগ্র বিশ্বজুড়ে তিন জন নারীর অন্তত একজনকে মারা হয়েছে, জোরপূর্বক যৌনক্রিয়া করতে বাধ্য করা হয়েছে, বা অন্য কোনভাবে তার জীবনে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে যেখানে নির্যাতনকারী কোনভাবে তার পরিচিত ছিল।

নারীর প্রতি সহিংসতাকে কয়েকটি বৃহৎ শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এগুলোর মধ্যে "ব্যক্তির" দ্বারা সহিংসতা ও "রাষ্ট্রের" দ্বারা সহিংসতা উভয়ই রয়েছে।। সহিংসতার কোন কোন ধরন আছে যা ব্যক্তির দ্বারা ঘটে যথা - ধর্ষণ, গৃহ নির্যাতন, যৌন হয়রানি, প্রজননগত জোর-জবরদস্তি, কণ্যা শিশুহত্যা, লিঙ্গভিত্তিক গর্ভপাত, প্রসবকালীন সহিংসতা, উচ্ছৃঙ্খলা জনতার দ্বারা সহিংসতা বা দাঙ্গা, রীতি বা আচারগত চর্চা যেমন সম্মান রক্ষার্থে হত্যা বা অনর কিলিং, যৌতুক সহিংসতা বা পণ মৃত্যু, নারী খৎনা, অপহরণপূর্বক বিবাহ বা জোরপূর্বক বিবাহ। আবার কিছু কিছু ধরনের সহিংসতার কর্তা হচ্ছে রাষ্ট্র, যেমন - যুদ্ধকালীন যৌন সহিংসতা, সংঘর্ষের সময় যৌন সহিংসতা এবং যৌন দাসত্ব, বাধ্যতামূলক নির্বীজন, জোরপূর্বক গর্ভপাত, পুলিশ ও কর্তৃত্বকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দ্বারা সহিংসতা, পাথর ছুড়ে হত্যা বা চাবুক মারা। আবার অনেক ধরনের যৌন সহিংসতা সংঘটিত সংগঠিত অপরাধ চক্রের দ্বারা, যেমন - নারী পাচার এবং জোরপূর্বক বেশ্যাবৃত্তি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে নারীর জন্ম থেকে শুরু করে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সকল পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন ধরন নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে নতুন ধারা তৈরি হয়েছে যেখানে বিভিন্ন সম্মেলন বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিভিন্ন ডিরেক্টিভ এর সাহায্যে আন্তর্জাতিক মাত্রায় এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে চাচ্ছে, যেমন যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে ডিরেক্টিভ, মানব পাচারের বিরুদ্ধে ডিরেক্টিভ। উল্লেখ্য, এখানে ডিরেক্টিভ বলতে কোন আন্তর্জাতিক সংঘের একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি করা লক্ষ্যমাত্রাকে বোঝানো হয় যেখানে সংঘটির সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে সেই লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে কাজ করতে হয়, কিন্তু সেই লক্ষ্যপূরণের উপায় সেখানে বলে দেয়া থাকে না।

পারিবারিক সহিংসতা (গৃহ নির্যাতন বা পরিবারে সংঘটিত সহিংসতা নামেও পরিচিত) বলতে বিবাহ বা একসাথে বসবাসের মতো পারিবারিক পরিবেশে সংঘটিত সহিংসতা বা অন্যান্য নির্যাতনকে বোঝানো হয়। সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে সহিংসতার প্রতিশব্দ হিসাবে পারিবারিক সহিংসতা প্রায়শই ব্যবহৃত হয়, যা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে থাকা একজন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি করে থাকে এবং বিপরীত লিঙ্গের সম্পর্কগুলোতে বা একই লিঙ্গ ভিত্তিক সম্পর্ক কিংবা প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রী বা সঙ্গীদের মধ্যে হতে পারে। বিস্তৃত অর্থে, শিশু, কিশোর, বাবা-মা বা বয়োজ্যোষ্ঠদর প্রতি সহিংসতাও পারিবারিক সহিংসতা হিসেবে বিবেচিত। এটি শারীরিক, মৌখিক, মানসিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, প্রজননমূলক এবং যৌন নির্যাতন সহ একাধিক রূপ পরিগ্রহ করে, যেখানে সূক্ষ্ম, জবরদস্তিপূর্ণ রূপ থেকে শুরু করে বৈবাহিক ধর্ষণ, দমবন্ধ, মারধর, নারী জননাঙ্গের বিকৃতি এবং এসিড নিক্ষেপের মতো সহিংস শারীরিক নির্যাতন পর্যন্ত হতে পারে যা অবশেষে পঙ্গুত্ব বা মৃত্যু ডেকে আনে। পারিবারিক হত্যাকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে পাথর মেরে হত্যা করা, গৃহবধূকে অগ্নিদগ্ধ করা, অনার কিলিং বা সম্মান রক্ষার্থে হত্যা এবং যৌতুকের কারণে মৃত্যু (যা কখনও কখনও পরিবারের সদস্যদের যোগসাজসে হয়ে থাকে)।

ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন তোলার পদ্ধতি



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

Ads3

Ads dawun