গন্ধরাজ লেবু (ইংরেজি: Gandha-raj Lemon; বৈজ্ঞানিক নাম: Citrus limonia (?)) এক প্রজাতির লেবু। লেবুর এই প্রজাতিটি পাতিলেবুর ন্যায় টক নয়। এটি সাধারণত: ভাতের পাতে খাওয়া হয়।
গন্ধরাজ লেবু মূলত বাংলাদেশ এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে দেখা যায়।
সংক্ষিপ্ত বিবরণ
গন্ধরাজ লেবু অনিয়মিত ভাবে বেড়ে উঠা একটি গুল্ম বা কাঁটাজাতীয় ছোট গাছ।
এর ফুল বেগুনি রঙের হয়ে থাকে ।
ফল দেখতে অনেকটা সূচালো থেকে ডিম্বাকার বা উপবৃত্তকার।
এর স্বাদ আম্লিক এবং খোসা হলুদ রঙের।
সাধারণ ব্যবহার
ফলের রস স্কোয়াশ এবং গৃহজাত শরবত তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।
এই লেবু আচার, সাইট্রিক অ্যাসিড, পেকটিন এবং লেবু তেল তৈরীতে এবং এটা মসলা জ্যাম, জেলি, আচার এবং সুরা ঘটিত পানীয় প্রস্তুতিতে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হয়।
এই লেবুর ঔষধি গুনও বর্তমান।
এতে পাতি বা কাগজি লেবুর চেয়ে বেশি পরিমাণে আন্টিস্কর্বিক ভিটামিন সি পাওয়া যায়।
এটা দাগ তুলতে এবং একটি ধোলাই এজেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গে চাষের এলাকা
পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় এর চাষ বেশী দেখা যায়।
প্রয়োজনীয় আবহাওয়া
গন্ধরাজ লেবু চাষের জন্য নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু প্রয়োজন।
এছাড়াও এটি উষ্ণ আদ্র অঞ্চলেও হয়ে থাকে।
সেচসেবিত ও বৃষ্টিনির্ভর দুই অবস্থাতেই এর চাষ ভালো হয়ে থাকে।
অধিক বৃষ্টিপাত ও উষ্ণ অঞ্চলেও এর চাষ হয়ে থাকে।
আগাছা নিয়ন্ত্রণ
বর্ষাকালে আগাছা একটি প্রধান সমস্যা, একবার বা দুবার নিড়ানি দিয়ে আগাছা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
মাটির বাযু চলাচল এবং স্বাস্থ ভালো রাখার জন্য হালকা কর্ষণ বা আগাছা নিয়ন্ত্রণ ইতাদির প্রয়োজন।
রাসায়নিক ভাবে আগাছা নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্লাইফসেট ৪১ % এস. এল.@ ১.৫ লিটার/একর বা
প্যারাকোয়েট ডাইক্লোরাইড ২৪ % এস. এল @ ১ লিটার /একর প্রয়োগ করা যেতে পারে।
মধ্যবর্তী ফসল
শিম্বী গোত্রীয় ফসল যেমন সোয়াবিন, ছোলা, বাদাম, বরবটি, মটর ইতাদি লেবু বাগানে চাষ করা যায়।
লেবু চারা ছোট অবস্থায় প্রথম ৩-৪ বছর মধ্যে চাষ করা যায়।
গাছ ছাঁটাই এবং নির্দিষ্ট আকার দেওয়া
প্রয়োজন হলে নতুন গাছকে বাঁশ দিয়ে ঠেকা দেওয়া যেতে পারে।
ফল প্রদানকারী গাছের অবাঞ্চিত ডালপালা যেমন রোগগ্রস্ত এবং মৃত ডাল ছাঁটাই করা হয়।
গন্ধরাজ লেবু একটি চিরহরিৎ প্রকৃতির, অতএব প্রুনিং অপরিহার্য নয়।
ফুল ও ফল
সাধারণত, লেবু স্ব পরাগিত ফসল।
মৌমাছি লেবুর পরাগমিলন ঘটাতে সাহায্য করে।
গন্ধরাজ লেবু রোপন করার ১ বছর ৬ মাস পর থেকে ফুল ও ফল ধরে।
বৃদ্ধি উৎসেচকের ব্যবহার
লেবু গাছে ফুল আসার পর বেশী ফল ধরা, কম ফল ঝরে যওয়া এবং বেশী ফলনের জন্য ১০ পি পি এম জিব্বরেলিক অ্যাসিড অথবা
এন এ এ ১০ পি পি এম ফুল আসার ১৪ দিন আগে এবং সম্পূর্ণ ফুল ফোটার ১৪ দিন পর আর একবার স্প্রে করা হয়।
কৃষি সমস্যা
বীজ ব্যবস্থাপনা
বীজের উৎস
গুণগত মানের বীজ ব্যবহারে ২০% অধিক ফলন পাওয়া যায়।
সেইজন্য ভালো সংশোধিত বীজ অনুমোদিত বীজব্যবসায়ীর নিকট থেকে নেওয়া উচিত।
বীজ কেনার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা
শংসিত বীজের প্যাকেট বীজ উৎপাদক ও বীজ কোম্পানির সর্বদা ট্যাগ থাকতে হবে এবং উভয়ের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি লেখা থাকবে :
অঙ্কুররোধগম বীজের শতাংশ (৯০-৯৫%)
বীজ উৎপাদনের তারিখ।
অন্যান্য বীজ এবং রোগ পোকার থেকে মুক্ত।
শংসিত বীজের উৎস
রাজ্য বীজ নিগম
জাতীয় বীজ নিগম
রাজ্য বীজ ফার্ম
জাতীয় রাজ্য বীজ সমবায়
রাজ্য কৃষি বিভাগ
বেসরকারী সংস্থা
সমবায়
প্রগতিশীল কৃষক
স্থানীয় অনুমোদিত ডিলার
বংশ বিস্তার
সাধারনত বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার হয়ে থাকে।
বীজ সুস্থ সবল গাছ থেকে নেওয়া হয়।
বীজ বের করার ৩ দিনের মধ্যে লাগাতে হবে নতুবা এর অন্কুরোধগম ক্ষমতা হ্রাস পায়।
এছাড়াও গন্ধরাজ লেবু কলম, দাবা কলম এবং কাণ্ড কাটিং দ্বারা বংশবিস্তার করা হয়ে থাকে।
এর মধ্যে কলমের মাধ্যমেই বংশবিস্তার বেশী করা হয়ে থাকে কারণ কলমের গাছ অভিন্ন হয়, গোড়া এবং কাণ্ড রোগ এড়ানো যায় উপযুক্ত রুট স্টক ব্যাবহার করে।
চারা তৈরী
নতুন নিষ্কাশিত বীজ ২০ সেমি X ১০ সেমি দূরত্বে এবং ১.৫-২ সেমি গভীরতায় নার্সারিতে বপন করা হয়।
৩ সপ্তাহের মধ্যে এই বীজ অঙ্কুরিত হয়।
রোপনের সময়
চারা বসানোর আদর্শ সময় হলো বর্ষার শুরুতে।
তবে সেপ্টেম্বর - অক্টোবর বা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে সেচের উপস্থিতিতে ও লাগানো হয়ে থাকে।
রোপনের দুরত্ব
৫ X ৫ মিটার বা ৬ X ৬ মিটার।
গাছের সংখ্যা /একর
১১০ টি গাছ /একর অথবা ১৬০ গাছ /একর।
মাটি
গন্ধরাজ লেবু বিভিন্ন ধরণের মাটিতে চাষ করা যেতে পারে তবে ভালো নিকাশী ব্যবস্থা ও জৈব পদার্থ পূর্ণ মাটিতে এর চাষ সর্বাধিক হয়ে থাকে ।
মাটির অম্লত্ব ৪.০-৯.০ এর মধ্যে থাকলে ফলন বেশী পাওয়া যেতে পারে।
গর্ত তৈরী
গ্রীষ্মের সময় ২ X ২ X ২ ফুট মাপে গর্ত খোড়া হয়।
এর পর গর্ত প্রতি মাটির মিশ্রণ এবং পচা সার বা খামার সার ৫০:৫০ অনুপাতে ভর্তি করা হয়ে থাকে।
একটি সুস্থ সবল চারা বা কলম প্রতি গর্তের কেন্দ্রে রোপণ করা হয়।
চারা রোপণের পর বৃষ্টিপাত না হলে হালকা সেচ দেওয়া যেতে পারে।
কলা লেবুর উপকরিতা
স্ট্রোক: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অনুযায়ী নিয়মিত কমলা লেবু, গ্রেপফ্রুট জাতীয় ফল খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। ব্লাড প্রেসার: রত্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেমন সোডিয়াম কম খাওয়া প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়ানো। কমলা লেবুতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
কমলালেবুর উপকারিতা ও পুষ্টিগুন
কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনের পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বেটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কমলায় উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ হচ্ছে ফ্ল্যাভনয়েড যা ফুসফুস এবং ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর।