প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার উপায়
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বৈধপথে বিদেশ গমনের জন্য অভিবাসী ঋণ, বিমান টিকেট করার জন্য এবং প্রবাস হতে একেবারেই দেশে ফিরে আসলে কর্মসংস্থানের জন্য পূনর্বাসন ঋণ ব্যতিত অন্যকোন ঋণ প্রদান করে না। সুতরাং আপনি জমি কেনা, বাড়ি করা করার জন্য ঋণ পাবেন না।আজকে আলোচনা করবো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে ।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার উপায়সম্পর্কিত কিছু সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর।
প্রশ্ন ১ঃ আমি কি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে ঋণ পেতে পারি?
উত্তরঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক যেহেতু শুধুমাত্র প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করে তাই আপনি তিন ক্ষেত্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঋণ পেতে পারেন-
ক। বৈধপথে বিদেশ গমনের সময় বিদেশগামী কর্মীকে অভিবাসী ঋণ প্রদান করে। তাই আপনি যদি বৈধপথে বিদেশ গমনের জন্য ঋণ নিতে চান তবে পাবেন। ঋণর পরিমান সর্বোচ্চ তিন লক্ষ টাকা। (বিস্তারিত-)
খ। আপনি যদি প্রবাস হতে ছুটিতে বাড়ি আসেন এবং প্রবাসে আবার ফিরে যেতে চান সেই ক্ষেত্রে বিমান টিকেট করার জন্য সর্বোচ্চ দুই লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
গ। আপনি যদি প্রবাস হতে একেবারেই ফিরে আসেন, আর ফিরে যাবেন না, এখন দেশে কিছু করতে চান তবে আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে পূনর্বাসন ঋণ নিতে পারবেন। ঋণর পরিমান সর্বোচ্চ দশ লক্ষ টাকা। (বিস্তারিত-)
অভিবাসী ঋণ প্রদান
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন
অভিবাসন ঋণ প্রাপ্তির প্রাথমিক যোগ্যতাঃ
আবেদনকারীকে নিয়োগকারী/ব্যক্তিগতভাবে সংগৃহীত ভিসার ০২ কপি (ভিসা যাচাইয়ের জন্য) ফটোকপি ও মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে। উক্ত ভিসা ০৩ (তিন) কর্ম দিবসের মধ্যে যাচাই করে আবেদনকারীকে ব্যাংক হতে ফোন/এস.এম.এস-এর মাধ্যমে জানানো হবে।
২. আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার ঘনিষ্ঠজন ব্যাংকের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।
৩. অভিবাসন ঋণ গ্রহণের জন্য জামিনদারের অবশ্যই আর্থিক সচ্ছলতা থাকতে হবে।
৪. ভিসা যাচাইয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে নিম্নে বর্ণিত কাগজপত্রসহ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে যোগাযোগ করতে হবে।
৭. অভিবাসন ঋণ গ্রহণকালে কর্মীকে বীমা সুবিধা নিতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
ঋণ পরিশোধের চার্জ এবং সময়সীমা
১. আপনার ঘনিষ্ঠ আত্বীয় বা নিয়োগকর্তার মাধ্যমে যদি আপনি বিদেশে চাকরির জন্য ভিসা লাভ করে থাকেন।
ভিসা সঠিক পাওয়ার পরবর্তী করণীয়ঃ
১. অভিবাসন ঋণ গ্রহণের জন্য আবেদন ফর্ম পাওয়ার আগে ব্যবস্থাপনা পরিচালক/ব্যবস্থাপক-এর বরাবর আবেদন করতে হবে।
২. নমুনা অনুযায়ী আবেদন করার পর অভিবাসন ঋণের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
৩. আবেদনকারীর সদ্য তোলা ০৩ (তিন) কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
৪. আবেদনকারীর জামিনদারদের প্রত্যেকের সদ্য তোলা ০২ কপি করে সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
৫. অভিবাসন ঋণ গ্রহণকালে কর্মীকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে।
৬. অভিবাসী কর্তৃক আয়কৃত সমুদয় রেমিটেন্স উক্ত সঞ্চয়ী হিসাবের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করতে হবে।
৮. জামিনদারদের যে কোন এক জনের ব্যাংক একাউন্টের চেক এর ০৩টি পাতা (চেক MICR হতে হবে ) প্রদান করতে হবে।
৯. আবেদনকারীকে দূতাবাস কর্তৃক প্রদত্ত ভিসা ও লেবার কন্ট্রাক্ট (যেখানে প্রাপ্ত বেতন ভাতাদির উল্লেখ আছে) এর ফটোকপি (০২ কপি) এবং স্থানীয় ভাষায় অনুবাদকৃত ভিসার ফটোকপি (প্রয়োজন সাপেক্ষে) এবং ভিসার যথার্থতা বিষয়ে বিএমইটি/বোয়েসেলের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।
১০. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এর সত্যায়িত ফটোকপি (যদি থাকে) প্রদান করতে হবে।
১১. শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে ।
১২. অভিবাসন ব্যয়ের বিবরণী সাদা কাগজে লিখিত দিতে হবে।
১৩. আবেদনকারীর বিদেশের কর্মস্থলের ঠিকানা, টেলিফোন নং/ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি (যদি সম্ভব হয়) জমা দিতে হবে। BMET কর্তৃক ইস্যুকৃত ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ডের উভয় পিঠের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে।
১৪. কর্ম অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিতে হবে।
১৫. যে এজেন্সীর মাধ্যমে বিদেশে যাবেন অথবা বিমান টিকেট ক্রয় করবেন, সে এজেন্সী কর্তৃক সম্ভাব্য যাত্রার তারিখসহ প্রত্যয়ন।
১৬. বিমান টিকেটের ফটোকপি। (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
১৭. ঋণ ফেরত প্রদানের হলফনামা।
অভিবাসন ঋণ পরিশোধের চার্জ ও নিয়মাবলীঃ
১. অভিবাসন ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার মাত্র শতকরা ০৯ টাকা।
২. পরিশোধের দিন হতে সর্বোচ্চ ০২(দুই) মাস গ্রেস পিরিয়ড প্রদান করা হয়।
৩. দেশ ভেদে প্রাপ্ত ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ০২ বছর (২২ টি মাসিক কিস্তিতে গৃহীত ঋণ পরিশোধ করতে হবে)। যেমনঃ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরিশাস, ব্রুনাই, কাতার, ইতালি, ইউরোপ ইত্যাদি।
৪. সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে ১০ কিস্তিতে ০১ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন
নির্দিষ্ট অঙ্কের ঋণ নেয়ার পরে টাকা ফেরত দেয়ার সময় শতকরা সুদের হার ০৯ টাকা। আপনার অবস্থানরত দেশের ভিসার মেয়াদ অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সময়সীমা ২ বছর। ঋন নেয়ার পরে ব্যক্তিকে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
প্রশ্ন ৩ঃ আমি দুবাই/কাতার/সৌদি আরব/ইরাক থাকি? আমি জমি কেনার জন্য/বাড়ি করার জন্য/ ব্যবসায় করার জন্য ঋণ নিতে চাই।
উত্তরঃ আপনাদের অবগতির জন্য যানাচ্ছি যে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বৈধপথে বিদেশ গমনের জন্য অভিবাসী ঋণ, বিমান টিকেট করার জন্য এবং প্রবাস হতে একেবারেই দেশে ফিরে আসলে কর্মসংস্থানের জন্য পূনর্বাসন ঋণ ব্যতিত অন্যকোন ঋণ প্রদান করে না। সুতরাং আপনি জমি কেনা, বাড়ি করা বা ব্যবসায় করার জন্য ঋণ পাবেন না। প্রবাসীদের অনেক আবেদন থাকায় আশা করছি ভবিষ্যতে আমরা এই ঋণ প্রকল্পগুলো চালু করতে পারবো ।
প্রশ্ন ৪ঃমাসিক টাকা রাখার ব্যবস্তা আছে কি?
উত্তরঃ জি আছে-দ্বিগুণ আমানত প্রকল্প
প্রবাসী দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমানত প্রকল্প
দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমানত প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবাসীদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিরাপদে টাকা জমা রাখার সুযোগ রয়েছে।
প্রবাসী দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমানত প্রকল্পে প্রবাসীদের জমাকৃত টাকা ১৫ বছরে দ্বিগুণ হবে।
বৈশিষ্ট ও সুবিধাদিঃ
গ্রাহককে ১৫ বছর পর জমাকৃত অর্থের দ্বিগুণ টাকা প্রদান করা হবে।
গ্রাহকের সম্পূর্ণ টাকা বীমাকৃত।
আবেদনের যোগ্যতাঃ
৮ থেকে ৬৫ বছরের যে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী একাউন্ট খুলতে পারবেন।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের অবশ্যই রেসিডেন্স/ওয়ার্ক পারমিট থাকতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই সঞ্চয়ী হিসাব থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয় তথ্যাদিঃ
- এই সুবিধা নিতে গ্রাহককে সঞ্চয় হিসাব খোলা আবশ্যক।
- সঞ্চয় হিসাব খুলতে সর্বনিম্ন ১০০০/-(এক হাজার টাকা) মাত্র আবশ্যক।
- আবেদনকারীর ০২(দুই) কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি।
- নমীনির ০১(এক) কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি।
- শনাক্তকরনের জন্য আবেদনকারীর বৈধ পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি ০৬(ছয়) পৃষ্ঠা অথবা বিদেশী পাসপোর্টের
- ক্ষেত্রে (বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য ভিসা লাগবে না) নির্দিষ্ট পৃষ্ঠার সত্যায়িত ফটোকপি।
- এন্ট্রি ভিসা সত্যায়িত, ইংরেজী ব্যতীত অন্য ভাষার ক্ষেত্রে অনুবাদকৃত কপি।
- মোবাইল নং।
- ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি।
- বিদেশী ব্যাংক একাউন্ট।
ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি নিম্নরুপঃ-
ভিসা সঠিক পাওয়ার পরবর্তী করণীয়ঃ
১. অভিবাসন ঋণ গ্রহণের নিমিত্তে আবেদন ফর্ম প্রাপ্তির পূর্বে ব্যবস্থাপনা পরিচালক / ব্যবস্থাপক-এর বরাবর আবেদন করতে হবে।
২. নমুনা অনুযায়ী আবেদন করার পরে অভিবাসন ঋণের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
৩. আবেদনকারীর সদ্য তোলা ০৩ (তিন) কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি,পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি,বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
৪. আবেদনকারীর জামিনদারদের প্রত্যেকের সদ্য তোলা ০২ কপি করে সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা সংবলিত পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
৫. অভিবাসন ঋণ গ্রহণকালে কর্মীকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে।
৬. অভিবাসী কর্তৃক আয়কৃত সমুদয় রেমিটেন্স উক্ত সঞ্চয়ী হিসাবের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করতে হবে।
৭. অভিবাসন ঋণ গ্রহণকালে কর্মীকে বীমা সুবিধা নিতে হবে।
পরবর্তী করণীয়ঃ
৮. জামিনদারদের যে কোন এক জনের ব্যাংক একাউন্টের চেক এর ০৩টি পাতা (চেক MICR হতে হবে ) প্রদান করতে হবে।
৯. আবেদনকারীকে দূতাবাস কর্তৃক প্রদত্ত ভিসা ও লেবার কন্ট্রাক্ট (যেখানে প্রাপ্ত বেতন ভাতাদির উল্লেখ রয়েছে) এর ফটোকপি (০২ কপি) এবং স্থানীয় ভাষায় অনুবাদকৃত ভিসার ফটোকপি কপি (প্রয়োজন সাপেক্ষে) এবং ভিসার যথার্থতা বিষয়ে বিএমইটি/বোয়েসেলের প্রত্যায়ন ।
১০. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এর সত্যায়িত ফটোকপি (যদি থাকে) প্রদান করতে হবে।
১১. শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে ।
১২. অভিবাসন ব্যয়ের বিবরণী সাদা কাগজে লিখিত।
১৩. আবেদনকারীর বিদেশের কর্মস্থলের ঠিকানা, টেলিফোন নং / ই-মেইল ঠিকানা ইত্যাদি (যদি সম্ভব হয়)।
BMET কর্তৃক ইস্যুকৃত ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স কার্ডের উভয় পিঠের সত্যায়িত ফটোকপি ।
১৪. কর্ম অভিজ্ঞতার সনদ ।
১৫. যে এজেন্সীর মাধ্যমে বিদেশে যাবেন অথবা বিমান টিকেট ক্রয় করবেন সে এজেন্সী কর্তৃক সম্ভাব্য যাত্রার তারিখ সহ প্রত্যায়ন।
১৬. বিমান টিকেটের ফটোকপি। (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
১৭. ঋণ ফেরত প্রদানের হলফনামা।