চা'য়ের  উপকরিতা ও চা সমন্ধে

চা চীর সবুজ উদ্ভিদ প্রজাতি যা শুকনো পাতা থেকে তৈরি হয়।  জনপ্রিয় পানিয় এটি বাংলাদেশের মুলত কৃষি ভিত্তিক রপ্তানি মুখি বহুবর্ষজীবি ফসল ।  চা সাধারনত  সুগন্ধযুক্ত ফসল প্রশান্তিদায়ক ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়, যা অনেকেই উপভোগ করে। ক্লান্ত দেহে যখন অলসতা এসে বাসা বাঁধে তখনই এই আলস্য দূর করতে চাই এক কাপ চা। ইংরেজিতে চা-এর প্রতিশব্দ হলো টি (ঃবধ)। গ্রিকদেবী থিয়ার  নামানুসারে এরূপ নামকরণ করা হয়েছিল। চীনে ‘টি’-এর উচ্চারণ ছিল ‘চি’। পরে হয় যায় ‘চা’।

চায়ের উপকারিতা

একারণে চা ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ।

মশলা চা'য়ের উপকারিতা

মসলা চা পানের উপকারিতাঃ

মশলা চায়ে ব্যবহার্য সকল মসলাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। শুধু গরম মসলার ব্যবহার যেন এক কাপ চা পানের উপকারিতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। চায়ে মসলা ব্যবহারের ফলে এরা পরিপাকে সাহায্য করে। মৌসুমি সর্দি ও কাশি প্রতিরোধেও এই চা অত্যন্ত চমৎকার কাজ দেয়।

মশলা চা বানানোর পদ্ধতি 

প্রথমে জল ও দুধ এক সঙ্গে মিশিয়ে আঁচে বসান। একটুক্ষণ পর ফুটে উঠলে চিনি, দারচিনি, এলাচ ,লবঙ্গ দিন। এরপর চিনি গলে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।

প্রণালি: পাত্রে দুধ, পানি, এলাচির খোসা, লেমন গ্রাস, আদা, চিনি, মৌরি ও দারুচিনি মিলিয়ে বলক তুলে নিতে হবে। বলক এলে চা–পাতা দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট নেড়ে জ্বাল দিতে হবে। এবার চুলা বন্ধ করে ২–৩ মিনিট ঢেকে রাখুন। পরে ছেঁকে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

লেবু চ'য়ের উপকারিতা 

লেবু চা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে উল্লেখযোগ্য কাজ করে লেবু চা। এটি শরীরের উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা যেমন বাড়িয়ে দেয়, তেমনি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল রাখে নিয়ন্ত্রণে। লেবু চা দাঁতের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। ... যার ফলে গলাব্যথা, মুখের ঘা আর টনসিলের সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে লেবু চা।

আদা চা'য়ের উপকারিতা

আদা চায়ের উপকারিতা (health benefits of ginger tea) দৈনন্দিন ডায়েটে আদা চা যোগ করে দিলে শরীরে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যে কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে। ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না(health benefits of ginger tea) ।

রং চা'য়ের উপকারিতা 

রং চায়ে উপস্থিত পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা দেহের অভ্যন্তরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চায়ে ৭% থিওফাইলিন ও থিওব্রোমিন রয়েছে যা শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির জন্য অনেক উপকারী। চা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হলেও এতে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উত্তেজক পদার্থ।

গ্রীন টী চা'য়ের উপকারিতা 

গ্রীন টি পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালরি তৈরি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এটি এক দিনে ৭০ কালরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করে। তার মানে নিয়মিত গ্রীন টি পানের মাধ্যমে বছরে ৭ পাওন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।

চা বানানোর উপায়

চারটি লবঙ্গ, দু'টি এলাচ, একটি দারুচিনির টুকরো, তিন কাপ পানি, ১/৪ চা চামচ আদা কুচি, আধা কাপ দুধ, দুই টেবিল চামচ চিনি বা মধু ও দুই টেবিল চামচ চা পাতা নিয়ে নিন। এবার প্রথমে ব্লেন্ডারে লবঙ্গ, এলাচ এবং দারুচিনি গুঁড়া করে নিন। পাত্রে পানি ও মসলার গুঁড়া দিয়ে সেদ্ধ করুন। চুলা থেকে পাত্রটি সরিয়ে ঢেকে রেখে দিন পাঁচ মিনিট।

দুধ চা বানানোর পদ্ধতি 

আপনাকে বলে রাখি, কাপ, মগ কিংবা গ্লাসে পরিমাণমতো গরম দুধ নিয়ে, ছাঁকনিতে চায়ের দানা ফেলে তার ওপর ধীরে ধীরে গরম জল ঢালুন। দেখতে পাবেন সাদা দুধের রং ধীরে ধীরে কেমন বদলে যাচ্ছে! গুঁড়া দুধে যদি একান্তই চা বানাতে হয়, তবে গরম জলে দুধ ভালো করে ফুটিয়ে তারপর তা দিয়ে চা বানান।

লবঙ্গের চা'য়ের উপকারিতা 

চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে যারা চর্চা করেন তাদের মতে, প্রতিদিন দুবার করে লবঙ্গ চা খেলে শরীরে প্রবেশ করে ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন কে, ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ আরও একাধিক উপকারী উপাদান। যা নানাভাবে আমদের শরীরের উপকারে লেগে থাকে। লবঙ্গের ভেতরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ক্যান্সার এজেন্ট।

  

লবঙ্গের চা তৈরির নিয়ম

লবঙ্গ চা বানানোর প্রক্রিয়া

প্রথমে পরিমাণ মতো লবঙ্গ নিয়ে বেঁটে নিতে হবে। তারপর সেই লবঙ্গের গুঁড়ো এক কাপ পানিতে মিশিয়ে কম করে ৫-১০ মিনিট ফোটাতে হবে। যখন দেখবেন পানিটা ফুটতে শুরু করেছে, তখন তাতে হাফ চামচ চা পাতা দিন। আর কিছু সময় অপেক্ষা করে পানিটা ছেঁকে নিলেই হয়ে গেলো লবঙ্গ টি।

আকাশ কাঁদে বাতাস কাঁদে আমার মন - সুনোনিগম